সংবাদ
আড়াইহাজারে যৌতৃকের জন্য অন্ত:সত্তা খুন
আড়াইহাজারে মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে দুইটি হত্যাকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কয়েকদিন ধরে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই অবনতির দিকে বলে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। গতকাল বুধবার সানিয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত¡া ছিলেন বলে জানা গেছে। মৃতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ ছিল গাড়ী কেনার জন্য ১০ লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে না পেয়ে তাকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশ খবর গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে যেকোন এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর স্বামী ইমনসহ মৃতের শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত লোকজন থানায় হত্যারকান্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবীতে থানায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন। এসময় থানা চত্বরে তারা হট্রগোল শুরু করেন। মৃত সানিয়া আক্তারের বাবা ছানাউল্যাহ মিয়া বলেন, আড়াই বছর আগে আমার বিয়ে সঙ্গে স্থানীয় ঝাউগড়ার দক্ষিণপাড়া এলাকার সেলিমের ছেলে সবজি ব্যবসায়ী ইমনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিলনা। এর মধ্যে সনিয়া ৪ মাসের অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়েন। পারিবারিক কলহের কারণে ৪ মাস ধরেই সে বাবার বাড়িতে বসবাস করছিল সানিয়া। গত মঙ্গলবার সকালে তাকে বুঝিয়ে ফের স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়। ছানাউল্যাহ আরও বলেন, জামাতা ইমন গাড়ী কিনার জন্য চাহিদা মাফিক ১০ লাখ টাকা না পেয়ে আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগে ২৭ কাইয়ুম (২১) নামে এক স্যানিটারী ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। ছিনতাইকারীরা তার সঙ্গে থাকা মোবাইল সেট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় তিনি তাদের প্রতিহত করতে চাইলে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে সে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ২৭ ভোর ৬টার দিকে আড়াইহাজার-মদনপুর সড়কের স্থানীয় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ইকবারদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে হিমেল (২০ ) নামে এক যুবককে জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। সে স্থানীয় বালিয়াপাড়া এলাকার আবুল বাশারের ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, সে এর আগেও স্থানীয় এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে। মৃতের বাবা স্থানী মসজিদের ইমাম মোজ্জামেল হক বলেন, আমার ছেলে কাইয়ুম স্যানিটারী ব্যবসায়ী ছিলেন। সে ভোর ৬ টার দিকে স্থানীয় ইকবারদী বাজারে সকালের নাস্তার জন্য যাচ্ছিল। পথে তার ব্যবহারের মোবাইলটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে দুবৃর্ত্তরা। এতে সে বাঁধা দিলে তাকে ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আমি এর ন্যায় বিচার দাবী করছি। স্থানীয়দের অভিযোগ, হত্যার পাশাপাশি বাড়ছে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেড়ে গেছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। প্রতিদিনই এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে রাজনৈতিক সংঘাত। একে অপরকে গায়েল করতে গিয়ে বিভিন্ন দলের কর্মীদের হাতে ধারালো অস্ত্রের ঝনঝনানি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না আড়াইহাজার থানার পুলিশ। পুলিশ এসব বিষয়ে অনেকটা উদাসহীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিশকে আরও বেশী দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান সচেতন মহল।