সংবাদ
কর্ম হারাতে পারে জেলার ৩০ হাজার ইটভাটা শ্রমিক
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও সদর উপজেলায় লাইসেন্স বিহীন মোট ৮৭টি অবৈধ ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম আগামী ৭ দিনের মধ্যে গুটিয়ে নেয়ার নির্দেশনা জারি করার কারনে ইট-ভাটা গুলোতে কর্মরত ২৫/৩০ হাজার নারী ও পুরুক শ্রমিক কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে! গত ১ মে দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলী ফেরীঘাট সংলগ্ন ইট-ভাটায় সরেজমিন ঘুরে এমন তথ্য জানায় কর্মরত শ্রমিকরা। সিরজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় মোঃ কামাল হোসেন গ্রামের বাড়ি। গত ২ বছর পূর্বে গ্রামে কর্মহীন হওয়ায় দুই ছেলে আর এক মেয়েকে এবং স্ত্রীকে নিয়ে কাজ করতে এসেছেন সদর উপজেলার বক্তাবলী ফেরীঘাট সংলগ্ন ইট-ভাটায়। তার স্ত্রী তাহমিনা বেগমও তার সাথে ইট ভাটায় কাজ করেন। গত দুই বছল করেনা মহামারির কারনে পুরোদমে খেলা বন্ধ ছিলো। এখন শুনতাছি বৈধ-অবৈধ ইট ভাটায় সরকারি বিধি-নিষেদ। বাজারে গিয়া সামান্য চাইল, ডাইল কেনার সাধ্যও আমাগো নাই। যদি ইটখোলা বন্ধ হইয়া যায় তাইলে আমরা পোলা মাইয়া লইয়া কই যামু আর কি খামু। আমনই প্রলাপ বকছিলেন ভাটায় কর্মরত শ্রমিক কামাল হোসেন। সর্ব প্রর্থমে আমাগো আল্লাহ দেখবো হেরপর প্রধামমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শওকত আলী এ বিষয়ে জানান, আমরা সর্বদাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অত্র বক্তাবলীতে ৬৫টি ইট ভাটার মধ্যে ৩৪ টি বৈধ এবং ৩১টি ইটভাটাকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। অত্র বক্তাবলী এলাকায় বৈধ ৩৪টি ইট ভাটায় কর্ম না থাকলে ১০ হাজার শ্রমিকের পরিবার পরিজন মানবেতর জীবন যাপন করবেন বলে আমি আশঙ্কা প্রকাশ করছি। সূত্র থেকে জানা যায়, রূপগঞ্জের ৫৬টি ইটভাটার মালিকপক্ষ ও সদর উপজেলার বক্তাবলী, গোগনগর, আলীরটেক ইউনিয়নে ৩১টি ইটভাটার মালিকপক্ষ হাইকোর্টের আদেশের বিপক্ষে লিভ টু আপিল করেছেন। তাদের মধ্যে একটি পক্ষ শুনানীর সময় পেয়েছে। এজন্য মালিকপক্ষ আরো বেশ কিছুদিনের সময় চেয়েছিল। তবে জেলা প্রশাসন তাদেরকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সকল অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলায় বৈধ-অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ৩৪৪টি। যার ২৫৪ টিই চলছে অবৈধভাবে। আর বৈধ ইটভাটার সংখ্যা মাত্র ৯০টি। একটি ইটভাটা পরিচালনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ ২৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। নানা কারণেই ভাটা মালিকরা এসব কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারেন না। এজন্য বেশিরভাগ মালিক বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভাটা পরিচালনা করছেন। এরই মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে।