সংবাদ
বন্দরে লাম্পট জয়নালের ফের আগ্রাসন!
বন্দর উপজেলা কৃষি অফিস হতে বিতারিত হওয়া সেই লম্পট জয়নাল আবারো বন্দরে এসে ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। লম্পট জয়নাল ২০১৯ সালে ৮ আগষ্ট বন্দর উপজেলায় নারী কেলেঙ্কারীর সময় ধরা পড়ে। যা নিয়ে সারা দেশসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় হয়। সেই জয়নাল এবার বন্দর উপজেলা কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সদস্যেদের ভুল বুঝিয়ে একটি জমি নিয়ে মিথ্যা প্রভাকান্ডা ছড়ানো অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৯ অক্টোবর লম্পট জয়নালের নেতৃত্বে সমিতির কিছু সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে ও স্থানীয় গুন্ডাদের ভাড়া করে বন্দরের বালিয়া এলাকায় সমিতির অপর সদস্য ফারুক আহমেদের ভাই মোঃ সাইফুল ইসলামের মালিকানা সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা করে। এ সময় লম্পট জয়নালের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া গুন্ডারা জমির উপরের চারদিকের বাউন্ডারী দেয়াল ভাংচুর ও সাইফুল ইসলামের ভাই গোলাম মোস্তফাসহ ৪জনকে মারধরসহ লুটপাট করে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু লম্পট জয়নাল সমিতির সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে একই সমিতির সদস্য ফারুক আহমেদের নামে মিথ্যা প্রভাকান্ডা ছড়ায়। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। লম্পট জয়নাল বলে বেড়ায় সমিতির ৪৮জন সদস্যের জন্য বন্দরের মাধবপাশা মৌজায় আরএস-৩৮০ খতিয়ানের সিএস ও এসএ-৭২৯ ও আরএস-৯২২ দাগে মোট ৫০ শতাংশ জমি ও একই মৌজার আরএস ১২৬ খতিয়ানে সিএস ও এসএ-৭১৯ ও আরএস-৯৩২ দাগে ২৯ শতাংশ জমি একুনে ২ দাগে ৭৯ শতাংশ নাল জমি নাকি মাত্র ১০জনের নামে রেজিষ্ট্রি করা হয়। ঐ ১০জনের মধ্যে ফারুক আহমেদ ১জন সদস্য বলে মিথ্যা প্রচার করেন। শুধু তাই নয়, এ মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে ফারুক আহমেদকে দায়ি করে মানুষের কাছে কুৎসাও রটায়। প্রকৃত পক্ষে দেখা যায় সমিতির সকল সদস্যের নামে জমিটি ক্রয় করা হয় ২০১২ সালে ২৭ মে, এর দলিল নং ৪৪৫২। দলিলটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আব্দুর রশিদের নামে ০.৯৯ শতাংশ, মোঃ ফাহিম উদ্দিন ৬.০০ শতাংশ, মোঃ শাহ আলম ০.৯৮ শতাংশ, শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দেবনাথ ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ জয়নাল আবেদীন ১.৯৬ শতাংশ, মোঃ সাইদুল হক ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ জয়নাল আবেদীন ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ সামছুল আরফিন মনির ২.৯৪ শতাংশ, আঃ গনি হাওলাদার ১.৯৬ শতাংশ, মোঃ সামছুল আলম ০.৯৮ শতাংশ, মিসেস সেতেরা বেগম ১.৯৬ শতাংশ, মোঃ নাজমুল হাসান ০.৯৮ শতাংশ, বেগম নাজমা ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ মিজানুর রহমান ০.৯৮ শতাংশ, কাজী সাইফুল ইসলাম ০.৯৮ শতাংশ, প্রশান্ত কুমার বর্মণ ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ মোজাম্মেল হক ০.৯৮ শতাংশ, বেগম ফেরদৌসী আক্তার ২.৯৪ শতাংশ, মোঃ বেলাল হোসেন গাজী ০.৯৮ শতাংশ, শ্রী নিরঞ্জন মন্ডল ১.৯৬ শতাংশ, আক্তারুজ্জামান ০.৯৮ শতাংশ, বেগম আশরাফুন্নেছা ০.৯৮ শতাংশ, বেগম রুমা সামাদ ১.৯৬ শতাংশ, মাহমুদ আল মামুন মোল্লা ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ নুরুল ইসলাম ৫.৯০ শতাংশ, মোঃ নুরুল ইসলাম সরকার ০.৯৮ শতাংশ, বেগম ফরিদা আক্তার ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ আব্দুল জব্বার ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ মোকাব্বের হোসেন ভ’ইয়া মারুফ ১.৯৬ শতাংশ, এ কে এম শফিউল আলম ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ আনোয়ার হোসেন ১.৯৬ শতাংশ, মোঃ জাকারিয়া ১.৯৬ শতাংশ জমি ৩৮০ খতিয়ানের আরএস ৯২২ দাগের ৫০ শতাংশ জমি ভাগভাগিসহ নামজারি করে নিয়ে যান। পরে আরএস ১২৬ খতিয়ানে সিএস ও এসএ-৭১৯ ও আরএস-৯৩২ দাগে ২৯ শতাংশ জমি বেগম সারোয়ার সুলতানা ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ সিরাজুল হক ১.৯৬ শতাংশ, মোঃ ফারুক আহমেদ ৭.৮৪ শতাংশ, মোঃ লাল মিয়া সরকার ১.৯৬ শতাংশ, অবনী রঞ্জন হালদার ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ আবু সাঈদ ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ শাহ আলম ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ আজিজুর রহমান ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ শহিদ উল্লাহ মিয়া ০.৯৮ শতাংশ, কাজী আমিরুল হক ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ আলাউদ্দিন ০.৯৮ শতাংশ, মিসেস জহুরা আক্তার ০.৯৮ শতাংশ, মংউসাং ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ দেলোয়ার হোসেন মীর ০.৯৮ শতাংশ, মোঃ মনিরুল ইসলাম ১.৯৬ শতাংশ ও লিপি রানী পাল ০.৯৮ শতাংশ জমি নিজ নিজ নামে নামজারি করে যার যার সাহাম অনুযায়ী ভোগদখল করেন। পরবর্তিতে সমিতির সদস্যরা কেহ কেহ নিজ প্রয়োজনে জমির মালিকানা অন্য সদস্যের নিকট দলিলের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। সে মোতাবেক সদস্য ফারুক আহমেদ তার ৮টি শেয়ারের মালিকানা (৩ ভাই, ১ বোনের) প্রাপ্য জমি নিজ প্রয়োজনে তার ভাই-বোনের মধ্যে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৮১৭ নং দলিল মূলে হস্তান্তর করেন। কিন্তু লম্পট জয়নাল এ দাগের মালিকানা না হয়েও সমিতির অন্যান্য সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে হামলাসহ ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ ঘটনায় জমির বর্তমান মালিক মোঃ সাইফুল ইসলাম থানায় গত ২৮ অক্টোবর রাতে জিডি করেন, জিডি নং-১৩৩০ ও ৩০ অক্টোবর সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উল্লেখ্য এই লম্পট জয়নাল আবেদীন ২০১৯ সালের ৮ আগষ্ট দুপুরে তার অফিস কক্ষেই এক মহিলা অফিস পিওনের স্পর্শকাতর স্থানে হাতাহাতি, মহিলার পেটে চুম্মন ও টেনে তার কোলে বসিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এ নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় হয়। বন্দর উপজেলার কর্মচারীরা জানান, জয়নাল দীর্ঘ ২৭ বছর বন্দর উপজেলার উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার পদটি দখল করে ছিল। সে এই পদে থেকে দীর্ঘ ২৭ বছরে সরকারি কোটি কোটি টাকাও লোপট করেছে। ভ্রমণ ভাতার নামে লাখ লাখ টাকা অবৈধ ভাবে সে হাতিয়ে নিয়েছে। সে ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী হওয়ার পরও ২য় শ্রেনীর কর্মচারীর সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছিল। সে সরকারি টাকা লোপট করে ইতিমধ্যে বন্দরের কবরস্থান রোডে ৪ শতক ও ২ শতকের ২টি প্লট, আমিন আবাসিক এলাকায় ৪ শতকের ১টি প্লট ও রূপালী আবাসিক এলাকার ৪নং গলিতে ৩ শতকের ১টি প্লট ক্রয় করে নিয়েছে। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি আড়াইহাজার উপজেলায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক মাকেট নির্মাণ করছে। কর্মচারীরা জানান, তার কর্মকান্ডের সকল বিষয় তদন্ত করলে অনেক গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। এই লম্পট জয়নাল পুনরায় বন্দর উপজেলার কর্মচারীদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির পায়তারা করছে।