সংবাদ
বানর রক্ষায় নাসিকের কমিটি গঠন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
বানর বাঁচাতে বিশেষ কমিটি গঠন করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। কমিটির নাম ‘সিটি কর্পোরেশন জীববৈচিত্র ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি’। দশ সদস্যের কমিটির প্রথম সদস্য নাসিক এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জীববৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা ধরে রাখা ও টেকসই ব্যবস্থাপনার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন এবং এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরকে তার আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি জীববৈচিত্র বিষয়ক রেজিস্টার ও ডাটাবেজ তৈরি করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। পূজা-পার্বণ ও নানা উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রচুর ফলমূল খায়। দেশভাগের আগে এসব অঞ্চলে অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। তারা বানরকে কলা, ফলমূল, মোয়া, মুড়ি, চিড়া খেতে দিত। বন-জঙ্গল ও শত শত গাছ থাকার কারণে বানরগুলো এলাকাজুড়ে বসবাস করত। বসবাসের সহায়ক পরিবেশ ও খাদ্যের অভাবে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলায় বানর দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বনজ ও ফলদ গাছ কমে যাওয়া এবং বসতবাড়ি বেড়ে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শীতলক্ষ্যা নদীবেষ্টিত নারায়ণগঞ্জ বন্দর বনজ ও ফলদ গাছে পূর্ণ ছিল। এক সময় প্রচুর বানর ছিল। এখন ছোট বড় মিলে বেশ কিছু বানর দেখা যায়। এলাকাবাসীর ধারণা, এক সময় বানরের বিচরণ বেশি ছিল। শহরের মিনাবাজার, টানবাজার, নয়ামাটি ও নিমতলা এলাকায় এখনো অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস করেন। তারা এখনো ফলাহারে অভ্যস্ত। তবে শহরে গাছ-গাছালি নেই। নেই ঝোপ-জঙ্গল। আছে বিল্ডিংয়ের সারি। দু’তিন বছর আগেও দেখা যেত, বন্দর বাজার মোড়ে বাড়ির ছাদ, বিদ্যুতের তার ও দোকানঘরের টিনের চালায় বানর বসে আছে। বাচ্চা বানরগুলোকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে বড় বানরগুলো লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। বানরগুলো বাসাবাড়ির উঁচু ছাদের কার্নিশ বেয়ে উপরে উঠছে আবার নিচে নামছে। কখনো খাবারের সন্ধানে দোকানঘরের চালার ওপর বসে থাকছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীরা পাউরুটি, বিস্কুট ও কলা খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। যানবাহন ও মানুষের চলাচলের কারণে বানরগুলো নিচেও নামছে না। লোকশূন্য বুঝেই বানর খাবার খেয়ে গাছ বেয়ে, দেয়াল টপকিয়ে চলে যেত। আবার ক্ষুধার জ্বালায় বিভিন্ন স্থানে থাকা অন্য বানরগুলো ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতো। খাদ্যের অভাবে বানরগুলো দুর্বল হয়ে জীর্ণশীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বানরগুলো বসতবাড়ি, দোকানঘর ও কারখানার গুদামের বিভিন্ন অংশে বসবাস করতো। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরে-বাইরে বানরের উৎপাতের শিকার হতেন। তবে খাবারের ব্যবস্থা হলে বানরের উৎপাত বন্ধ হয়ে যায় মনে করেন স্থানীয়রা। বন্দর বাজার মিষ্টির দোকানদার জানান, এক সময় দেখেছি বানর দেখলে লোকজন খাবার দিত। এখন দেখি লাঠি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। বানর খাবারের জন্য উৎপাত করে।