সংবাদ
মিয়ানমারে গোলাগুলি: এবার ঝুঁকিতে টেকনাফ সীমান্ত
বান্দরবন প্রতিনিধি
বান্দরবানের তুমব্রু, উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে মিয়ানমারের উত্তেজনার এবার আঁচ লেগেছে টেকনাফ সীমান্তেও। আতঙ্ক ভর করেছে সীমান্তের বাসিন্দাদের ওপর। ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি, গোলাবর্ষণ ও হেলিকপ্টারের বিচরণে নিরাপত্তার স্বার্থে এপারে কাজ করতে পারছেন না কৃষক, দিনমজুর ও জেলেরা। এরইমধ্যে টেকনাফ সীমান্তে অতি ঝুঁকিতে থাকা ৪০০ থেকে ৫০০ পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। যেখানে থেমে থেমে চলছে সংঘর্ষ। তবে বান্দরবানের তুমব্রু বা উখিয়া সীমান্তে মিয়ানমারের উত্তেজনার আঁচ বেশি হলেও, টেকনাফ সীমান্তে অনেকটাই কম। গেল তিনদিন একদম বন্ধ ছিল গোলাগুলি। যার কারণে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছিল সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে।
কিন্তু টেকনাফে হোয়াইক্ষ্যং, নাফ নদীর এপারে আবারও শুরু হয়েছে ব্যাপক গোলাগুলি। যার কারণে শঙ্কায় সীমান্তের বাসিন্দারা। কারণ, দিনে কিংবা রাতে যেকোনো সময় ভেসে আসছে গোলাগুলি শব্দ। এতে নিরাপত্তার স্বার্থে কাজে যেতে পারছেন না কৃষক, দিনমজুর ও জেলেরা। পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে।
সীমান্তের কানজরপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল জলিল (৬০) বলেন, ‘চিংড়ি মাছের ঘেরে গিয়েছিলাম, তখন দেখেছি লাইটের আলো ছাড়া জাহাজ যাচ্ছে, যা প্রত্যক্ষ করেছি বেড়িবাঁধ থেকে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ, তবে জাহাজ দেখা যাচ্ছিল না। গোলাগুলির শব্দে ভয়ে বেড়িবাঁধ থেকে চলে এসেছি।’
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা আব্দুস সালাম (৫৫) বলেন, ‘গোলাগুলির কারণে বিজিবি সাগরে ও বেড়িবাঁধে যেতে দিচ্ছে না। যে কারণে মাছ শিকার করা যাচ্ছে না। তারা জানায়, সরকারের নিষেধ রয়েছে সীমান্তে আসা যাবে না। সীমান্তে মিয়ানমারের মগরা এসে গোলাগুলি করছে। কাউকে নদীতে বা প্যারাবনে দেখলে গুলি করে– এ অবস্থা দেখছি।’
তুমব্রু বা উখিয়া সীমান্তের মতো টেকনাফ সীমান্তেও অতি ঝুঁকিতে থাকা ৫০০ পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। সীমান্তের বাসিন্দাদের আতঙ্ক দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি কমে গিয়েছিল। যে কারণে আতঙ্ক কমে যায়। গত তিনদিন একদম গোলাগুলি হয়নি। এতে কৃষক, দিনমজুর ও জেলেরা কাজে ফিরেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে শুক্রবার আবারও গোলাগুলি ও গোলা বর্ষণের কারণে আতঙ্ক বেড়েছে।
উল্লেখ্য, দেড় মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলছে অস্থিরতা। যার কারণে সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিজিবি।